ঢাকা,বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪

‘গুম হওয়া সন্তানদের মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিন’

স্টাফ রিপোর্টার ::gum

ঈদের আগে গুম হওয়া ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দেয়ার জন্য দাবি জানিয়েছেন তাদের স্বজনরা। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আন্তর্জাতিক গুম দিবস উপলক্ষে ‘মায়ের ডাক পবিত্র ঈদ-উল-আযহার পূর্বে গুম হওয়া সন্তানদের মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ দাবি জানানো হয়। গুম হওয়া বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বৃদ্ধ মা হাজেরা খাতুনের সভাপতিত্বে ও জাতীয় মানবাধিকার সমিতির মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা’র সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
সভায় তিনি বলেন, সরকার যেখানে মানুষ গুম করে ফেলে সেখানে কার কাছে গুমের প্রতিকার চাইবো। আমাকে যখন গুম করা হয়েছিল আমার স্ত্রী আর সন্তানদের কি অবস্থা হয়েছিল আমি উপলব্ধি করতে পারি। আমাকে দুই বছর আগে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের আগে আমি গুম হওয়া পরিবারের পাশে ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকবো। মান্না আরও বলেন, তাদের কান্না প্রধানমন্ত্রীর দরজায় কি কড়া নাড়ায় না। সারা বাংলাদেশের ষোল কোটি মানুষ তাদের কান্না দেখে কেঁদে উঠলেও আমাদের প্রধানমন্ত্রী উপলব্ধি করেন না। নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক বলেন, কেউ কেউ বলেছেন বিচার বিভাগীয় নিরপেক্ষ তদন্তের কথা। আমি বলি যে সরকার গুম করেছে তারা কি তদন্ত করবে। বরং আসুন আমরা যারা আছি সবাই মিলে একটি নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করি। সারা দেশ ঘুরে ঘুরে যারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার তাদের তালিকা তৈরী করি এবং তাদের কথা সাধারণ মানুষের কাছে পৌছে দিই। এতে করে এই সরকারের দুঃশাসনের পতন ঘটবে খুব তাড়াতাড়ি। তিনি বলেন, বিচার বিভাগ নিয়ে সরকার যেভাবে নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগ মুখোমুখি করেছে তা গণতন্ত্রের জন্য একটি অশনি সংকেত। তিনি পবিত্র ঈদ উল আযহার পূর্বে সকল গুম হওয়া সদস্যদেরকে তাদের মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান। সভাপতির বক্তব্যে হাজেরা খাতুন বলেন, আমি কিছুই বলতে পারবো না। আমি আমার সন্তানকে শুধু ফেরত চাই না, যারা গুম হয়েছে সবাই আমার সন্তান। আমি সব সন্তানকেই তাদের মায়ের কোলে দেখতে চাই। প্রধানমন্ত্রী আমি নিজেও তো একজন মা এবং আপনি নিজেই আপনার বাবা মাসহ পরিবারকে অনাকাংখিত একটি ঘটনার মধ্যে হারিয়েছেন। আপনি তো বোঝেন পরিবারের প্রিয়জন হারিয়ে গেলে কি কষ্ট। আপনাকে অনুরোধ করবো আপনি উদ্যোগ গ্রহণ করে আমাদের এই পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ান। এই সময় হল জুড়ে কান্নার রোল পড়ে যায়।
এর আগে লিখিত বক্তব্যে গুম হওয়া সাজেদুল ইসলাম সুমনের বড় বোন ফেরদৌসী ইসলাম বলেন, আন্তর্জাতিক গুম দিবসে রাষ্ট্রীয়ভাবে কোন কর্মসূচি পালন করতে আমরা দেখছি না। কারণ রাষ্ট্রই যখন একটি মানুষকে গুম করে তখন সে বিষয়ে তারা কেনই বা কথা বলবে। যত দায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের। আজো সেই দায় নিয়ে প্রিয়জনকে ফিরে পাওয়ার আশায় সাংবাদিকদের সামনে হাজির হয়েছি। গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও বাসদ নেতা কমরেড খালেকুজ্জামান, বিশিষ্ট মানবাধিকার সংগঠক নূর খান লিটন, শিরীন হক, অধিকারের সভাপতি ড. সি. আর আবরার, পরিচালক নাসিরউদ্দিন এলান সভায় বক্তৃতা করেন।

পাঠকের মতামত: